অনুবাদ : কমলেশ সেন
বিভাগঃ ফিরে পড়া
নতুন বৌ। সবে বিয়ে হয়ে এসেছে। সে এক ফকিরকে ভিক্ষে না দিয়ে ফিরিয়ে দিল। ফকির খুব রুষ্ট হল। রাগ-অপমানে তার চোখ-মুখ উত্তপ্ত হয়ে উঠল। বিড়বিড় করে গালিগালাজ দিতে দিতে সে ফিরে যাচ্ছিল। পথে বৌটির শ্বাশুড়ির সঙ্গে দেখা। ফকিরটি শ্বাশুড়িকে অভিযোগ করল, ‘তোমার বৌয়ের এতো হিম্মত, একজন ফকিরকে ভিক্ষে দিল না। একজন ফকিরকে একমুঠো আটা, এক-আধটা রুটি দিলে কি সংসারে অনটন দেখা দিত। হায়, কেমন সময় পড়েছে। প্রতিটি বাড়ির বৌ এখন বাড়ির কর্ত্রী হয়ে গিয়েছে।’
শুনে শ্বাশুড়ি তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠল। বলল, ‘আমি বেঁচে থাকতে এসব অনাসৃষ্টি হতে দেব না। এতো সাহস! চলো আমার সঙ্গে!’
ফকির খুব খুশি হল। শ্বাশুড়ির মাথা থেকে ভারি কাঠের বোঝাটা নিজের মাথায় তুলে নিল। সারাটা পথ শ্বাশুড়ি বৌকে গালিগালাজ দিতে দিতে চলল। খুব, খুব ঠুসতে লাগল বৌটিকে। এর চোদ্দপুরুষ উদ্ধার করল। বাড়িতে পৌঁছেই ফকিরের মাথা থেকে শ্বাশুড়ি কাঠের বোঝা নিয়ে বাড়ির মধ্যে ঢুকল। বৌকে গালিগালাজ করতে লাগল। ওকে বেশ কথা শোনাল। মন উজার করে যা ইচ্ছে তা-ই বলল। ওর এতো সাহস, একজন ফকিরকে ভিক্ষে দেয়নি।
ফকির ভাবল, আজ তার পোয়া বারো। বেশ কয়দিন আর ভিক্ষের জন্যে বেরুতে হবে না। অবশেষ শ্বাশুড়ি বাইরে এল। বাইরে এসে বলল, ‘আমি বেঁচে থাকতে এ মানা করার কে! মানা যদি করতেই হয়, আমি করব। যাও, এখান থেকে চলে যাও। ভিক্ষাটিক্ষা হবে না। ও কে মানা করার। নবাবজাদি কোথাকার!’
সমাপ্ত