বনেদি কলকাতার দুর্গোৎসব
₹250 ₹200
শুভদীপ রায় চৌধুরী
বইটি যথেষ্ট তথ্যমূলক ও মনোগ্রাহী। লেখক বিভিন্ন প্রাচীন প্রতিষ্ঠান পরিবারগুলির বিষয়ে যথেষ্ট গবেষণা করে এটি রচনা করেছেন। অজানা তথ্যকে জানার জন্য বিশেষত কলকাতার পারিবারিক দুর্গাপুজোর বৈভব ও গরিমাকে জানতে এই বইটি কাজে লাগবে। — ড. সৌমিত্র শ্রীমানী (প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ)
This book on the five-day autumnal festival of Bengal which is an unparalleled celebration of mass public festivity is a great endeavour to understand how it all began. I am happy that Mr.Subhadip Roy Chowdhury has painstakingly traced the evolution of Durga Puja of the seven traditional Bonedi houses of Calcutta. Bonedi Kolkata Durgotsava is a laudable effort to understand and chronicle a social, cultural and religious event that has gripped the imagination of every Bengali, no matter in which part of the world they live. It will be a worthwhile addition in my library. — Shahanshah Mirza (Great Great Grandson of king Wajid Ali Shah)
শুভদীপ রায় চৌধুরীর এই বইটিতে পরিশ্রমের ছাপ আছে। পুরনো কলকাতাকে হালফিলের সব মানুষই চেনেন। সেই কলকাতা তো একটা নয়, অনেকগুলো কলকাতা। চালচিত্তির একের মধ্যে বহু। তাই তা এত বর্ণময়। সেই বর্ণময়তার সেরা অনুষঙ্গ দুর্গাপুজো। বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজোর রোশনাই, জৌলুস, গরিমা পুরনো কলকাতার গবেষকের বরাবরের আগ্রহের বিষয়। ছোট ইতিহাস, বড় ইতিহাস সেখানে পাশাপাশি চলে। এই বইটিতে তেমন কিছু ইতিহাস তুলে আনা হয়েছে। মনস্ক পাঠক বইটিতে প্রয়োজনীয় তথ্য পাবেন। অন্যমনস্ক পাঠক বইটি পড়ে আনন্দ পাবেন। — ড. সুপ্রতিম দাশ (অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ এবং সহ-অধ্যক্ষ স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা)
একবিংশ শতাব্দীতে পদার্পণের আগেই বঙ্গীয় শারদীয়া মহাপূজা একটি জাতীয় উৎসবরূপে মহান ঐতিহ্যের আধার হয়ে উঠেছে। সংযুক্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের সাংস্কৃতিক (UNESCO) বিবেচনায় বর্তমানে সেই শারদীয়া আয়োজন আন্তর্জাতিক মহামূল্যে অভিষিক্ত হয়েছে।
লক্ষণীয় যে, মহাযজ্ঞ শব্দবৃন্ধবৃত এই মহাপূজা ভারতের নানা স্থানেই বিশেষত অভিভক্ত বঙ্গের বিভিন্ন জনপদে দ্বিশতাধিক বর্ষ ধরেই পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু অনস্বীকার্য যে, এই শারদীয়া মহোৎসবের মূল কেন্দ্র হয়ে উঠেছে কলকাতা নগরী। ইতিহাস কেন্দ্রিক আলোচনায় প্রবেশ না করলেও বলতে হবে যে, একটি তথ্য সমৃদ্ধ গ্রন্থের খুবই প্রয়োজন ছিল যটিতে কলকাতার দুর্গাপূজার ঐতিহ্যটি এই নগরীর ইতিহাসের সঙ্গে সমান্তরালে পরিবারকেন্দ্রিক ভাবে ক্রমবিকশিত হয়েছে। সেই কর্তব্যটি সযত্নে সশ্রদ্ধভাবে করেছেন তরুণ লেখক শ্রী শুভদীপ রায় চৌধুরী। গ্রন্থালোচনায় প্রবেশের আগে খুব সংক্ষেপে হলেও বিষয়টি নিয়ে কিঞ্চিৎ বক্তব্য খুবই প্রয়োজন।
অসামান্য সমন্বয়ে বিবৃত এই দেবী প্রতিমায় দেখা যায় একাধারে বিদ্যাশক্তির আবাহন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক সমৃদ্ধি, রাষ্ট্রীয়ক নিরাপত্তা ও প্রাকৃতিক সংরক্ষণ এবং সর্বোপরি সর্ব প্রকারের দুর্গতিনাশের মহাশক্তির দিব্যায়িত প্রতীক সূচিত হয়েছে যথাক্রমে দেবী সরস্বতী, দেবী লক্ষ্মী, বিনায়ক গণেশ, সুব্রাহ্মণ্য কার্তিক, নবপত্রিকা ও মহিষাসুরমর্দিনী দশভুজা মহাদেবী দুর্গার প্রতিমার মাধ্যমে। এখন সমন্বয়ী শক্তিময় বার্তা ও আদর্শ আর কোন প্রতিমায় দৃষ্ট হয় না। অর্থাৎ এই বিগ্রহসজ্জা অতুলনীয়। সুতরাং এই পূজার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র একটি বাৎসরিক উৎসব উদযাপন মাত্র নয়, বরং দৃঢ় প্রত্যয়ে বলা যায়, জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বিশ্ব-মানব কল্যাণের মহত্তম আদর্শ হিসাবে।
এই আদর্শই ধ্বনিত হয়ে আছে দেবীর ধ্যানমন্ত্রে, স্তবে, স্তোত্রে ও মূল পূজাপদ্ধতিতে। বলতে দ্বিধা নেই, শাস্ত্রসম্মতভাবে সেই পূজা ও ধারা প্রতিপালিত হয়ে আসছে মূলত পারিবারিক পরিসরেই। যদিও সার্বজনীন মহাপূজার বারোয়ারি আয়োজনেও সবই শাস্ত্রানুমতেই হয়, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রাধান্য পায় সাধারণী মনোরঞ্জন ও বিনোদনের পুষ্টিকরণ। সমন্বয়ী বার্তা সূচিত ‘একচালার’ পরিকাঠামো প্রায় উঠেই গেছে ও উড়ে এসে জুড়ে বসেছে প্রতিযোগিতা-মূলক তথাকথিত ‘থিমের’ পুজো। সেই সব পূজামণ্ডপে দৃষ্টিনন্দন বহু বৈচিত্র্যের মহাপ্রকাশ ঘটলেও মহাদেবী প্রতি ভক্তির কোন প্রকাসি কিংবা চেতনার উন্নয়নের আদর্শ কোনও উদ্দীপনা ঘটে কিনা প্রশ্ন থেকেই যায়।
অকপটে বলা যায়, এই কলকাতার কতিপয় ঐতিহ্যবাহী পরিবারের আয়োজনে এই শারদীয়া মহাপূজা এখনও পালিত হয় প্রাচীন ধারার সংরক্ষণে তথা শাস্ত্রীয় মূল্যবোধে সশ্রদ্ধভাবে।
সেই পর্যায়েরই অতি বিশিষ্ট সাতটি পারিবারিক দুর্গোৎসবের বিবরণ বংশীয় পরিচয়সহ সুচারুভাবে উপস্থাপিত হয়েছে শুভদীপের গ্রন্থ মাধ্যমে। পেশায় সাংবাদিক, নেশায় সংস্কৃতিপূজক শ্রীমান শুভদীপ ভারতীয় সংস্কৃতির ঐক্যবাহী বৈচিত্র্যের চর্চায় বিশেষভাবে আগ্রহী নবপ্রজন্মের এক যুবক। সত্যাশ্রয়ী সংস্কৃতির আলোকে যুব-চেতনার উন্নয়নে আদর্শ ব্রতী শুভদীপ সেই প্রেরণার তাগিদেই মনন পঠন যথেষ্ঠ গবেষণা করে রচিত করেছেন ‘বনেদি কলকাতার দুর্গোৎসব’। এই গ্রন্থে নিবেদিত হয়েছে দুর্গাপুজোর ইতিহাস, দেবী দুর্গার ধ্যান ও স্তোত্র এবং যথানুক্রমে শোভাবাজার রাজবাড়ি, সাবর্ণ রায় চৌধুরী বাড়ি, বাগবাজার হালদার পরিবার, হাটখোলার দত্ত পরিবার, সাদার্ন এভিনিউের ঘোষ রায় পরিবার, কলুটোলার মতিলাল শীল পরিবার ও ভবানীপুর মিত্র পরিবার—এই সাতটি ক্ষেত্রের শারদীয়া আয়োজনের বিবরণ। অসামান্য পরিশ্রমে তথ্যসমৃদ্ধ সরস বয়ানে চমৎকারভাবে উপস্থাপিত করেছেন তিনি। বাস্তবিকই শুভদীপ শুধু কলকাতাবাসীদের কাছেই নয়, ইতিহাস, ধর্ম ও সংস্কৃতি—তিন পরিমাপের আগ্রহীদের জন্যই একটি অভিনন্দন যোগ্য কর্মসাধন করলেন। তাঁকে আন্তরিক স্নেহ প্রীতি ও অগ্রগতির জন্য শুভেচ্ছা জানাই।
-পণ্ডিত অজয় ভট্টাচার্য (স্তোত্রকার)
ISBN : 978-81-954866-2-5
Weight | 250 g |
---|---|
Cover | Hard Cover |
Cover Design | Bijay Das |
Illustration | Sudip Chakraborty |
Related Products
অনুবাদ ও সম্পাদনা : কৃষ্ণ শিঞ্জিনী দেব
শ্রীযোগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়
ভূমিকা ও সম্পাদনা : অলোক সরকার